• ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ১ আশ্বিন ১৪৩১

Shongbad Protikshon || সংবাদ প্রতিক্ষণ

সালাউদ্দিনের প্রকৃত বয়স জানতে আবেদন

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সালাউদ্দিনের প্রকৃত বয়স জানতে আবেদন

সালাউদ্দিনের প্রকৃত বয়স জানতে আবেদন

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের পদত্যাগের দাবি অব্যাহত রয়েছে। একাধিক সংগঠন ও সাবেক ফুটবলাররা মানববন্ধনের পাশাপাশি দিয়েছিলেন আল্টিমেটাম। তাতেও গদি থেকে সরতে নারাজ সাবেক এই ফুটবলার। উল্টো গণমাধ্যমকে আবারো সভাপতি পদে নির্বাচনে দাঁড়ানোর কথা জানিয়ে দেন তিনি।
বাফুফের গঠনতন্ত্রের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, সভাপতি বা অন্য পদে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৭২ বছরের বেশি হওয়া যাবে না। কাজী সালাউদ্দিন ১৯৫৩ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। অর্থাৎ বর্তমানে তার বয়স ৭০ বছর। আগামী ২৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে বাফুফে নির্বাচন। ঐ সময় তার বয়স হবে ৭১ বছর। ফুটবলাঙ্গনের অনেকের ধারণা, তার প্রকৃত বয়স আরো বেশি। যদিও কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ এই অভিযোগের স্বপক্ষে এখনো পাওয়া যায়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কাজী সালাউদ্দিনের আসল বয়স জানতে তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করা হয়েছে।
 
বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম ও এফসি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্লাবের সেক্রেটারি মো. শাহাদাত হোসেন তথ্য অধিকার (তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত) বিধিমালার, বিধি ৩ অনুযায়ী বাফুফে সভাপতির প্রকৃত বয়স জানতে চান। ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান হোসেন তুষার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা বরাবর তথ্য প্রাপ্তির আবেদনপত্র পাঠানো হয়।

শনিবার বাফুফেতে পাঠানো আবেদনপত্রে কাজী সালাউদ্দিনের এসএসসি বা মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনকৃত (তৎকালীন যে নাম প্রচলিত ছিল) সার্টিফিকেট অনুযায়ী ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সাল পর্যন্ত তার প্রকৃত বয়স কত তা জানা আবশ্যক। বয়স সংক্রান্ত তথ্য লিখিতভাবে এবং ছাপিয়ে তা প্রকাশের আবশ্যকতার কথাও এতে উল্লেখ করা হয়। 

এর আগে বাংলাদেশ ফুটবল সাপোর্টার্স ফোরাম নামের সংগঠনটি বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং তার যাবতীয় অনিয়ম ও দুর্নীতির অন্যতম দোসর হিসেবে মাহফুজা আক্তার কিরনকে অভিযুক্ত করে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছিল। এর পেছনে ১০টি কারণও তুলে ধরেছে তারা। এগুলো হচ্ছে-

১। বাফুফে নির্বাচনের জন্য কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করে বিগত সব নির্বাচনে তিনি জয়লাভ হয়েছেন। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার নিয়ম অনুযায়ী কোনো দেশের ফুটবল ফেডারেশন বা মেম্বার অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রমে রাজনৈতিক ও সরকারি হস্তক্ষেপ বরদাশত করা হয় না, সেরকম কিছু ঘটলে ফিফা সংশ্লিষ্ট দেশকে ফিফা থেকে নিষিদ্ধ করা হয়। যার ঘটনা বাংলাদেশে একবার ঘটেছিল কিন্তু আর্শ্চযের বিষয়- বিগত নির্বাচনগুলোতে খোদ বাফুফে নির্বাচনে কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করে সভাপতি হয়েছেন সেটার ব্যাপারে ফিফা সম্পূর্ণ নিশ্চুপ! আমরা চাই আগামীতে বাফুফে নির্বাচনে কেউ যাতে কোনোভাবে রাজনৈতিক ও সরকারি প্রশাসনিক যন্ত্র ব্যবহার করার সুযোগ না পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

২। বিভিন্ন সময় পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়াতে বাফুফের কার্যক্রমের বিপক্ষে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির রিপোর্ট হয়েছে সেগুলো আমলে নিয়ে দ্রুত একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক এবং দোষীদেরকে শাস্তির আওতায় আনা হোক।

৩। ফিফা, এএফসি এবং দেশি-বিদেশি স্পন্সরদের হতে প্রাপ্ত ফান্ড তছরুপ করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল হতে জানা গেছে এবং পত্র-পত্রিকা এবং মিডিয়াতে এসব নিয়ে রিপোর্ট হওয়া সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। 

৪। বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ কান্ডের পর ফিফার তদন্তের পর বাফুফের তদন্তে যেসব অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমান পেয়েছিল সে আলোকে যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় সবার মাঝে সন্দেহ তৈরি হয়েছে আসলেই কি কাউকে ছাড় দিয়ে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে? দোষীদের শাস্তি চাই।

৫। বিদেশি কোচ নিয়োগে বাণিজ্য হয়, কমিশন বাণিজ্য হয়। বিদেশি কোচেরা দেশের ট্যাক্স ফাঁকি দেন, এতে বাফুফের সায় আছে। বারবার এগুলোর সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

৬। ফিফার তদন্তের পর আবারও লোক দেখানো তদন্ত করতে হবে কেন? বাফুফে কি ফিফার চেয়ে বড় হয়ে গেল?

৭। বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটিতে বাফুফে সভাপতির একক ক্ষমতা কমাতে হবে।

৮। অবিলম্বে বাফুফে ভবনের ৪র্থ তলায় অবস্থিত আয়নাঘর খ্যাত বা আবাসিক হোটেল খ্যাত মহিলা ক্যাম্প বন্ধ করে ভালো, উন্মুক্ত এবং সুন্দর পরিবেশে স্থানান্তর করতে হবে।

৯। বাফুফেতে অবৈধভাবে নিয়োগ বন্ধ করতে হবে, সৎ যোগ্য এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগ করতে হবে।

১০। বাফুফের দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তা ইমরান হোসেন তুষার, জাবের বিন তাহের আনসারী, হাসান মাহমুদ, মোজাম্মেল মিঠু, তানভীর আহমেদ ও মাহবুব আলম পলোকে অবিলম্বে চাকরিচ্যুত করতে হবে এবং তাদের দুর্নীতির তদন্ত করে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে হবে।